আপনার ভাষা নির্বাচন করুন
দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্রের নীল নিস্তরঙ্গ তুতগোলা জলের পাশে পান্না সবুজ পাহাড়, আগ্নেয়গিরি আর জলের মাঝে ভাসমান মন্দির এই সব নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ আপনাকে বিস্মৃত করবেই।কলকাতা থেকে বিমানে কুয়ালালামপুর সেখান থেকে নীল সমুদ্রের উপর দিয়ে পুনরায় বিমান বদল করে বালি দ্বীপের রাজধানী ডেনপাসার বিমান বন্দরে নেমে অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে ডলার দিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রুপিয়া নিয়ে গাইডের হাতধরে পৌঁছে যান রামায়ন ও চৈনিক স্থাপত্য শৈলীর মিলনস্থল বালি।
ফ্রেস হয়ে লাঞ্চ করে নিতে পারেন স্থানীয় সিফুড গ্রিল্ড সামুদ্রিক মাছ,স্কুইড, নুডুলস,নানাধরনের স্যতে এবং শেষ পাতে আঞ্চলিক বিশেষ কেক জাজানন পাসার ও আইসক্রিম সহযোগে।রাতে দেখতে পারেন ইন্দোনেশিয়ার নৃত্যানুষ্ঠান যেখানে আপনার কানে ফ্রাঞ্জিপানি ফুল গুঁজে বরণ করে নেবে ইন্দোনেশিয় মহিলারা।
বালি দ্বীপ মূলত হিন্দু প্রধান, এখানে প্রচুর মন্দির আছে যার গায়ে রামায়নের বিভিন্ন চরিত্র খোদিত আছে।এই মন্দির গুলোই পর্যটকদের কাছে মূল আকর্ষণ।তার মন মাতানো গঠন শৈলী, অবস্থান ও ধর্মীয় গুরুত্বের জন্য।এখানে সব মন্দির গুলো তে গেলেই পরতে হবে লম্বা সারং,কোমড়ে স্কার্ফ জাতীয় বস্ত্র।ছবির মত সাজানো মেঙ্গুই গ্রামের ‘তামান আয়ুন'(সুন্দর বাগান) মন্দিরটি পামগাছের পাতায় চূড়া গুলো সাজানো। চৈনিক গঠন শৈলী পরিলক্ষিত হয়।
বেদগুল পর্বতমালার গায়ে নীল জলাধারে উপর সবুজ বাগান এবং অনন্য শিল্প নিদর্শন নিয়ে ভেসে আছে ‘উলুন দানু’ মন্দির টি। মন্দিরে আসার পথে দেখে নিতে পারেন”অ্যান্ড কুনিং ফ্রুট ও ফ্লাওয়ার মার্কেট, স্থানীয় ফল,মশলা,ড্রাগন ফ্রুট,সালাক, অ্যাভোকাডো,ডুরিয়ান এবং বিভিন্ন অর্কিড নিয়ে আপনাকে অভ্যর্থনা করবে এই মার্কেট।
বালি দ্বীপে প্রচুর আগ্নেয়গিরি আছে সবোর্চ্চ হল “বেদুগুলের মাউন্ট বাতুকারু”।এর নীচে অবস্থিত “পুরা লুহুর বাতুকারু মন্দির”।
নিঃসন্দেহে বালির আকর্ষণীয় মন্দিরটির নাম “তানহা লট মন্দির”।এর অবস্থান পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কেন্দ্র।ভারত মহাসাগরের উপর জেগে থাকা একটি পাথরের উপর অবস্থিত এই মন্দির।এই মন্দির এর গাত্রে উত্তাল সমুদ্রের জলরাশি বিচ্ছুরিত হয়ে অস্তগামী সূর্যের লালচে আভার সাথে মিশে এক অনির্বচনীয় দৃষ্টি নন্দনীকতা সৃষ্টি করে। মন্দিরে যাবার অনুমতি না থাকলেও তাকিয়ে অবাক দৃষ্টিতে দেখে চোখ স্বার্থক করার সুযোগ হারাবেননা।
বালি দ্বীপ বাটিক শিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ।মহিলারা সূক্ষ্ম হাতে তুলির টানে কাপড়ের উপর মোমের নক্সা করে তারউপর রং ঢেলে দেয় এবং শুকিয়ে গেলে গরম জলে মোম গলিয়ে সুন্দর বাটিকের নজর কারা নক্সা ফুটে ওঠে।বালির হস্তশিল্প কেষাকাটা ও দেখার জন্য উবুদের হ্যান্ডি ক্রাফ্ট মার্কেট যেতে পারেন পাথর,কাঠ ও রূপার গহনা ও সুনিপুণ কাজ দেখে আপনার পকেটকে সামলাতে পখরবেনানা।
বালির সৌন্দর্য নীল অতল সমুদ্র এবং তার মাঝে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি “মাউন্ট আগুং ও মাউন্ট বায়ুর” ছোটবেলায় ভূগোলের ব ইয়ে পড়া সেই সব আগ্নেয়গিরি চাক্ষুষ করার অনুপম সুযোগ। সবুজ ঘাসে ঢাকা পাহাড়ের মাঝে জালামুখ দিয়ে কালো ছাইয়ের স্রোত নেমে এসেছে।বালির সর্ব বৃহৎ লেক- বাতুর তার পাশেই আছে তিনতলা রেস্তোরাঁ যেখানে বসে লাঞ্চ করতে করতে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি দেখতে পারেন।
বালি উলাক কফির জন্য জনপ্রিয় এই উলাক হল একটা ভামবিড়াল জাতীয় পশু যে কফির ফল খেয়ে যে বিষ্ঠা নির্গত তার মধ্যে থাকা কফি বীজ গুলো পরিস্কার করে গুঁড়ি য়ে সুস্বাদু উলাক কফি তৈরি হয়।শুনে বমি পেয়েগেলেও এটাই সত্যি।এখানে কোকোনাট কফি, ভ্যানিলা কফি,রোসেলা টি,কোকো প্রভৃতি নানা স্বাদের চাইনিজ কফি টেষ্ট করতে পারেন।
বালির বার্ড- পার্ক টি বিশেষ আকর্ষণ কারন এখানে বিশেষ ২৫০ প্রজাতির ১০০০ পাখি আছে। এখানে বার্ড শো হয়।মিট দ্যা বার্ড স্টার অনুষ্ঠানটি হয়।বিরল পাখি দের সাথে আলাপ করার সুযোগ ছাড়বেনা।
বালি দ্বীপে ঘোরা সম্পূর্ণ হবেনা যদি “নুসা লেমবঙ্গন দ্বীপ “এ যান।এরা জন্য নীল জলরাশি মধ্যে দিয়ে ভাসমান পন্টুনের যাবার জন্য আপনাকে লাক্সারি ক্রুজ ক্যাটামারাণ এ টিকিট কাটতে হবে।যারা স্কুবা বা স্নরকেলিং করবেন তারা গাইড নিয়ে ম্যাক্স, অক্সিজেন নিয়ে সমুদ্রে নামতে পারবেন।সেখানে দেখতে পাবেন কোরাল রিফ, এবং নানা ধরনের নানা রঙের সব মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী সব নিয়ে আপনার মনে হবে যেন রুপকথার মত স্বপ্নের কোনো দেশে ঘুরে এলাম!
কলকাতা থেকে ফ্লাইটে কুয়ালালামপুর যেতে হবে ওখান থেকে বালি রাজধানী ডেনপাসার পৌঁছাতে হবে।বালি পৌঁছে ভারতীয়রা একমাসের অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন।আলাদা পয়সা লাগেনা।আসা যাওয়া ও কনফরম টিকিট ও হোটেল বুক পেপার লাগে।ডালার ভাঙিয়ে ইন্দোনেশিয় রুপিয়া নিয়েনিন।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর যাওয়া জন্য ভাল।
কোথায় থাকবেন-
সব ধরনের হোটেল আছে বাজেট বুঝে হোটেল নিন সি সাইড খরচ বেশি।
“জিমবারান বে বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড সাউন্ড স্পা”।
এসি দ্বি শয্যা ভাড়া ৫০০০।