ইয়েলাগিরি আর ডিসেম্বর এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা


তামিলনাড়ু ‘র সবচেয়ে সুন্দরী হিল স্টেশন ইয়েলাগিরি।২০০৫ এ যখন প্রথম এলাগিড়ি তে পা রাখি মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম,চেন্নাই এর এত কাছে তবু ট্যুরিজম সেভাবে গড়ে ওঠেনি।।পাহাড়ের মোড়ে মোড়ে অসম্ভব সুন্দর ভিউপয়েন্ট, দূর থেকে ভেলোর শহর টাকে বড় সুন্দর লাগে,বিশেষ করে রাতে।।এলাগিড়ির প্রান্তেই ভীষণ সুন্দর জলপ্রপাত জালাগামাপারাই জলপ্রপাত… ন্যাড়া পাথরের গা বেয়ে মিষ্টি এক ঝরনায় মন ভাল হয়ে যায়।।এছাড়াও আছে ইয়েলাগিরি হ্রদ,নীলভুর হ্রদ,মুরুগান মন্দির, পুঙ্গানুড় লেক.স্বামীমাল্লাই হিলস… স্বামীমালাই থেকে সানসেট আজও ভাবলে শিহরিত হয়ে যাই।।

এত গেল তথ্যের কথা, প্রথম বারে ইয়েলাগিরি তে আমি তিনদিন ছিলাম।।পায়ে হেঁটে বেড়ানোই অভ্যেস।।ডিসেম্বর মাস, ঠান্ডা হাওয়ার স্রোত চারিদিকে।।দূরে পাহাড় গুলি নীল আকাশে ঢেউ এর মত সাজানো।।হঠাৎ দ্বিতীয় দিন আবিষ্কার করলাম বারলেরিয়া।।তাও আবার ডিসেম্বরে।।আমাদের বাংলায় এই জংলী ফুল ফোটে ঠিক এই সময় টায় কিন্তু ওখানে ডিসেম্বরে দেখে বেশ চমকে যাই।।স্থানীয় এক ব্যক্তি নন্দকুমার ,যিনি তামিলনাড়ু ট্যুরিজমে গাইডের কাজ করতেন ( চুক্তির ভিত্তিতে) তিনি জানিয়েছিলেন যে স্থানীয় ভাষায় এর নাম “ডিসেম্বর পু” এবং অন্ধ্রপ্রদেশে চেঞ্চু উপজাতি র মেয়েরা মাথায় মালা করে পরেন বিকেল বেলায়।।অনন্তগিরি তে আবার এই বারলেরিয়া হলুদ রঙে’র।। যদিও এই বাংলায় হলুদ ভ্যারাইটি আমার চোখে আসেনি।।আর অনন্তগিরি তে আমি গেছি অক্টোবরের প্রথম দিকে ফলে ব্লুমিং সিজন না থাকায় তার সাথে সাক্ষাৎ হয়নি।।নন্দ কুমারের কাছে শোনার পর আমি সারাদিন শুধুই ভেবে গেছি, শুধু ফুলের ব্লুমিং এই এত বৈচিত্র‍্য এই দেশে অথচ এই দেশ টাই চেনা হল না ঠিক করে।।এই জীবনে হয়ত আর সম্ভব ও নয়।।

থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্সের মত দেশ গুলিতে বারলেরিয়া ডাইইউরেটিক্স হিসেবেও ব্যবহৃত হয় নিয়মিত।।

এখন এলাগিড়ি তে সিজনে প্যারাগ্লাইডিং ও হয়।তবে আগে থেকে হোটেলে বলে রাখলে ভাল হয় কারণ শীতে চেন্নাই থেকে অনেক ট্যুরিস্ট আসেন প্যারাগ্লাইডিং করতে।।

কিভাবে যাবেন-
হাওড়া থেকে ট্রেনে চেন্নাই।
চেন্নাই থেকে ৪ ঘন্টা,ভেলোর থেকে ২ ঘন্টা, পন্ডিচেরী থেকে ৪ ঘন্টার দূরত্ব হলেও প্রচারের অভাবে ইয়েলাগিরি আজও ব্রাত্য।।

-সঞ্জয় গোস্বামী-

শেয়ার করুন
Brush

আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ