আপনার ভাষা নির্বাচন করুন
পাহাড়,অরণ্য, জলপ্রপাত নিয়ে ভুবনেশ্বর থেকে ২২৫ কিমি এবং যাজপুর থেকে ১১৭ কিমি দূরে ওড়িশার প্রকৃতির আশীর্বাদ কেওনঝড় বা কেন্দুঝড় আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছে।কি নেই এখানে শাল মহুয়া কেন্দুয়া পাতায় ঢাকা শান্ত পাহাড় যেমন আছে তেমন আছে মহাভারতের সৃষ্টি উত্তাল বৈতরণী নদী তার সাথে আছে সুউচ্চ ঝর্ণা আর আছে মহাভারতের অন্যতম চরিত্র ভীম এর তৈরি ভীমকুন্ড জলপ্রপাত।এসব কিছু নিয়ে কেন্দুপাতার ঝাড় বা কেওনঝড় প্রকৃতির এক বিশ্বয়কর সৃষ্টি।
কেওনঝড় মূলত শাল, মহুয়া কেন্দুপতায় মোড়া পাহাড়ী অঞ্চল এই নামটি ই সমগ্র জেলার নাম এবং শহরটার ও নাম। সবুজে সবুজে প্রাকৃতির সৃষ্টি দেখে মন বারবার নেমে যেতে ইচ্ছে করবে জঙ্গলে।কেওনঝড় থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে আছে বড়াঘাঘরা জলপ্রপাত ২০০ ফুট উচ্চতা থেকে জল ঝাঁপিয়ে পড়ছে, তৈরি হয়েছে বড়াঘাঘরা ড্যাম, তিনদিকে পাহাড় ঘেরা নৈসর্গিকতায় সূর্যাস্তের অনুপম সৌন্দর্য মন প্রাশন্ত করেদেয়।
কেওনঝড় থেকে ৬০ কিমি দূরত্বে প্রধান আকর্ষণ খন্ডধর জলপ্রপাত যেতে পাঁচশো মিটার উপর থেকে লাফিয়ে পড়ছে জলরাশি কুয়াশা আর রামধনু সৃষ্টি হয়েছে নিচের সবুজ জলধারে এসে পড়ছে যা আপনার মন আচ্ছন্ন করে দেবে এক প্লব প্রশান্তিতে।এখান থেকে বেশ খানিকটা যাবার পর বৈতরণী নদীর উৎসস্থলের দেখা মিলল ।
জলরাশির উৎস দেখতে ২০০ সিড়ি পেরিয়ে উঠলাম মন্দিরে সেখানে মন্দিরে ভিতর কালো গরুর নাকের মত দুটো পাথরের ফুটো থেকে জল স্রোত নেমে এসেছে । এটাই গোনাসিকা ।গোনাসিকার এই সরু জলধারাই ভীমকুন্ডে ভয়াল ভয়ঙ্কর রুপ ধারন করেছে এটা ভাবতেই অবাক লাগে।পাশেই দেখেনিন কানঝাড়ি ড্যাম,ঘটগাঁও তারিনী দেবীর মন্দির ও গুন্ডিচাঘাই ফলস।
পরদিন সকাল বেলাতেই বেড়িয়ে পরেছি।যাব পঁচাশি কিলমিটার দুরে।আমাদের ড্রাইভার জগন্নাথদা বললেন “কাল যে নদী দেখেছেন আজ তাঁকে দেখে দেখবেন আর তারপর বলবেন কি দেখলাম !প্রায় তিনঘন্টা পথ পেরিয়ে পৌছালাম “ভীমকুন্ড ।চারিদিকে পাথরে উঁচু টিলা সেখান থেকে ভিউপয়েন্ট খুঁজে দেখাযাচ্ছে বৈতরণী নদীর উচ্ছাসময় রুদ্র রূপ। নদীর এপারটা কেওনঝড় ওপারটা ময়ূরভঞ্জ ।কাঠের সেতু দিয়ে বৈতরণী পেড়িয়ে পৌছেগেলাম ময়ূরভঞ্জের দিকের বৈতরনীতে। কথিত আছে ভীমের গদার আঘাতে এই ভীমকুন্ড তৈরি হয় । অদ্ভুত এই জলপ্রপাত উপর থেকে একটা জলধারা নেমে এসে নিচে কুন্ডতে পড়ছে এবং সেখান থেকে পুনরায় জলপ্রপাত তৈরি করছে।জলের বিচ্ছুরণ কুয়াশা মত আবেশ আর বৈতরণী রুদ্র জলচ্ছাস রূপ মুগ্ধ করে দেবেই।কতভাবেই না জল নামছে।সেই সরু হয়ে পড়া গোনাসিকা বৈতরণীর এখানে ভয়াবহ রূপ।এই সব নিয়ে ওড়িশার আশীর্বাদ কেওনঝড় প্রকৃতির এক বিষ্ময়কর সৃষ্টি।
হাওড়া থেকে ধৌলি এক্সপ্রেস,ফলকনামা এক্সপ্রেস করমন্ডল এক্সপ্রেস,পুরী এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন ছাড়ে যা যাজপুর-কেওনঝড় রোড যায়
স্টেশন থেকে বাস বা গাড়ি ভাড়া করে কেওনঝড় যেতে হয়।