উঠলো বাই তো ভুটান যাই


গত বছর পুজোর সময় হঠাৎ বেরিয়ে পড়লাম ভুটানের উদ্দ্যেশে। পুরোপুরি একটা আনপ্ল্যানড ট্রিপ। হাতে ৫ দিন সয়ম। যাওয়ার জায়গা অনেক গুলো।
শিলিগুড়িতে নেমে লোকাল বাস ধরে সোজা গেলাম ফুয়েন্টসলিং বর্ডার, সেখানে সমস্ত পারমিশন করিয়ে শেয়ার্ড ক্যাব করে পৌঁছালাম থিম্পু। প্রায় ৬ ঘন্টার জার্নি করে পৌছালাম রাজধানী। সুন্দর আবহাওয়া, অসাধারণ দৃশ্যপট আর কিছু ভুটানি গানের সুর আমাদের জার্নিটা আরো উপভোগ্য করে তুলেছিল।

কোনো বুকিং না থাকায়, কিছুক্ষন খোঁজাখুঁজির পর এক খান সুন্দর থাকার জায়গা পেলাম, কিছু ইন্ডিয়ান আর ভুটানি পদ খেয়ে সে রাতের ডিনার সেরে পরদিন বেরোলাম থিম্পু ঘুরতে। বুদ্ধাপয়েন্ট ঘুরে এসে, রাত্রে হোটেল ফিরে এলাম।

পরদিন দোচালা পাস হয়ে গেলাম পুনাখা জং, সুন্দর একটা মনেস্ট্রি, যেখানে সাক্ষী হলাম Blessing Giving ceremony এর।

সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাদের প্রতিমুহূর্তে অবাক করে দিচ্ছিল।

পরদিন রওনা হলাম পারো যাওয়ার জন্য, থিম্পু থেকে গাড়ি ঠিক করে প্রথমে গেলাম ছেলে-লা-পাস সুন্দর একটা ভ্যালি, যা না গেলে অনেক কিছু মিস করতাম। কিছু সময় কাটানোর পর পৌঁছালাম পারো, ড্রাইভার আমাদের একটা সুন্দর হোটেলে নিয়ে গেল, সন্ধ্যেবেলায় পারো টাউন টা কিছুটা ঘুরে দেখলাম, চারপাশে পাহাড়ের সারি, সুন্দর এই শহরটি আলাদা মায়া আছে।

পরদিন বেরিয়ে পড়লাম, টাইগার নেস্ট মনেস্ট্রির পথে, ১০,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সুন্দর দর্শনীয় স্থানটি পায়ে হেঁটে যেতে হয়। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক হাঁটার পর পৌঁছালাম। কিন্তু যা দেখলাম তা ভোলার নয়।অতীব সুন্দর ওই জায়গা কখনো ভোলার নয়।

ভুটানের প্রকৃতি, মানুষজন আপনাকে প্রতিমুহূর্তে আপন করে নিতে সক্ষম।
সময় করে ভুটান ঘুরে আসুন।

কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য
১) ভুটানে যেতে গেলে, ইন্ডিয়ান দের কোনো ভিসা লাগে না, NJP থেকে বাস ধরে জয়গাও বা ফুয়েন্টসলিং এসে পারমিশন করাতে পারেন। ভোটার কার্ড বা পাসপোর্টের বিনিময়ে মিলতে পারে পারমিশন। সঙ্গে লাগবে ৫ কপি ছবি।

বিনামূল্যে করা হয়। কিন্তু এজেন্ট দিয়ে করলে তাড়াতাড়ি হয়।
২) শনি-রবি ইমিগ্রেশন অফিস বন্ধ থাকে।
৩) ওখানে গিয়ে ভুটানি সিম কিনতে হবে, ২০০ টাকার বিনিময়ে মিলবে সিম।
৪) হিন্দি বা ইংলিশ চলতে পারে
৫) ইন্ডিয়ান রুপি চলে, ক্যাশ নিয়ে যাওয়া ভাল
৬)অনেকের প্রশ্ন, যে হোটেল বুকিং না থাকলে পারমিশন পাবো কি করে?

প্রথমেই বলি, আমরা কোনো রকম হোটেল বুকিং ছাড়ায় গেছিলাম। ওখানে গিয়ে বুক করলে খরচ কমবে। তবে বয়স্ক বা ফ্যামিলি হলে আগে থেকে বুকিং করে নেবেন। যদি বুকিং না করেন তাও পারমিশন পাওয়া যায়, ফুয়েন্টসলিং ইমিগ্রেশন অফিসের কাছে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের উল্টো দিকে একজন এজেন্ট আছেন যিনি খুব অল্প পয়সার বিনিময়ে (৩ জনের জন্য ১০০০ টাকা নিয়েছিল) পারমিশন পেতে সাহায্য করে থাকেন। এখন একটু নিয়ম পাল্টেছে, এখন ভুটান সরকার ট্রাভেলার দের উপর প্রতিদিন হিসাবে কিছু টাকা নিয়ে থাকেন।

-সপ্তর্ষি চৌধুরী—



শেয়ার করুন
Brush

আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ