আপনার ভাষা নির্বাচন করুন
ভারতের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তের সুন্দর রাজ্য কর্ণাটক এর পশ্চিম প্রান্তে ছোট্ট শহর শিমোগা, আয়তনে সত্তর বর্গ কিলোমিটার, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫৭০ মিটার উচ্চে অবস্থিত। জেলার নামও শহরের নামেই। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় তার ছবির মতো নিসর্গ শোভা নিয়ে, নিয়ত শহরের সারস্বত সাধনার মান উন্নত করে চলেছে। উল্লেখযোগ্য নামগুলি হলো কুভেম্পু বিশ্ববিদ্যালয়, জহরলাল নেহরু কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, শিমোগা ইন্সটিটিউট অফ মেডিকাল সায়েন্স। সুন্দর ক্যাম্পাসগুলির একদিকে সুউচ্চ পাহাড়, অন্যদিকে অরণ্য। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, হাতি, এবং চিতাবাঘের স্যাংচুয়ারি। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শিহরণ তুলে মাঝেসাঝে দু একটি চিতাবাঘের ছানা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও ছটকে চলে আসে। ক্যাম্পাসগুলি এত বড় যে গাড়ি সাইকেল বা বাইক ছাড়া যাতায়াত করা অসম্ভব সময় সাপেক্ষ।
শিমোগার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হলো যোগ ফলস, শহর থেকে দূরত্ব এক’শ কিলোমিটার। এশিয়ার সর্বোচ্চ জলপ্রপাত হিসেবে যোগ ফলসের খ্যাতি। অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা পর্যটকদের মুগ্ধ এবং আপ্লুত করবে এই বিশ্বাস নিয়েই ঘুরে আসুন। তবে গাড়ি ছাড়া যাতায়াতের অন্য মাধ্যম নেই, রাস্তার অবস্থাও ভালো নয়। এছাড়াও দর্শনীয় স্থান হিসেবে শিমোগার আকর্ষণ হলো শিভাপ্পা নায়ক প্যালেস মিউজিয়াম, মাট্টু লেক, সেক্রেড হার্ট ক্যাথিড্রাল চার্চ। যাদুঘরের প্রশস্ত লনে ষোড়শ এবং অষ্টাদশ শতকে তৈরি হওয়া পাথরে কোঁদা ভাস্কর্যগুলি সযত্নে রক্ষিত। প্রাকৃতিক শোভা ছাড়াও কুটির শিল্প, চন্দনকাঠ ও রোজউডের তৈরি বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফটের জন্য শিমোগা বিখ্যাত। স্মরণিকা হিসেবে এবং উপহার দেবার জন্য সংগ্রহ করতে পারেন ওদের নিজস্ব বিপণি থেকে।
শিমোগায় যেতে হলে সরাসরি উড়ান নেওয়া যায়, শিমোগার নিজস্ব বিমানবন্দর আছে, যা শহর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে। এছাড়াও বেঙ্গালুরু থেকে নিয়মিত বাস এবং ট্রেন যায়। ঝকঝকে রাস্তা, এবং প্রাকৃতিক শোভা দেখতে দেখতে ঘণ্টা পাঁচেকেই পৌঁছে যাবেন ছোট্ট সুন্দর এই শহরে।
থাকার জন্য বিলাসবহুল রিসর্ট, লজ, হোটেল কিছুরই অভাব নেই। আগে বুকিং করে নিলে ভালো হয়। সব মিলিয়ে দক্ষিণ ভারতের এই ছোট্ট শহর তার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, এবং প্রাকৃতিক শোভা নিয়ে পর্যটকদের মন ভরাবে, এটা বলাই বাহুল্য।
-ঋতুপর্ণা রুদ্র