সুন্দরবন! গঙ্গা,বম্ভ্রপুত্র, মেঘনানদীর অববাহিকার বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত প্রাকৃতিক বিস্ময়।১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী ম্যানগ্রোভ অরণ্যের নামটি হল সুন্দর বন।সুন্দরী গাছের আধিক্যর জন্য এই স্থানের নাম সুন্দর বন।বেশির ভাগটা বাংলাদেশ এ পড়লেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ ২৪পরগনা জেলায় বেশ কিছুটা এই সুন্দর বনের অন্তর্ভুক্ত। পৃথিবীর সর্বোবৃহৎ সুন্দরী গাছের অরণ্য এটি। প্রধানত সুন্দরী গাছ এবং তার সাথে দেখা যায় গরান,গেঁওয়া,গোলপাতা প্রভৃতি। সুন্দর বনের মূল আকর্ষণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার।এছাড়াও এখানে বৃহৎ আকারের কুমিড়,হরিন,সাপ, নানা পাখির আশ্রয় স্থল এই সুন্দর বন।
শিয়ালদা থেকে লোকাল ট্রেনে বা বাসে ক্যানিং। ক্যানিং থেকে গাড়িতে গদখালি আসতে হয়।এবং গদখালি থেকে লঞ্চ বুক করে প্যাকেট ট্যুরের তিনদিন,চারদিন বিভিন্ন প্যাকেজে সুন্দর বন ঘুরতে পারেন। লঞ্চেই থাকা খাওয়া বিনোদন এর সুবিধা আছে এছাড়া আপনি গদখালী বা সজনে খালি তে হোটেলেও থাকতে পারেন যা আপনাকে এই প্যাকেজের মধ্যে একটু বেশি চার্জ নিয়ে সুবিধা দেওয়া হয় ।তবে আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হন তাহলে লঞ্চে রাত্রি বাস করে শুনতেই পারেন বনের মধ্যে বাঘের ডাক,কুমিড়ের সাঁতারকাটার শব্দ।
প্রথম দিন লঞ্চ আপনাকে নিয়ে যাবে গোসাবা সেখানে আপানাকে দেখানো হবে হ্যামিল্টন সাহেবের বাংলো এবং বেকন সাহেবের বাংলো যেটা কাঠের তৈরি এবং এখানে রবীন্দ্রনাথ এসে কিছু সময় কাটিয়ে গেছেন।যদিও রক্ষনাবেক্ষণ অভাবে এটি ধ্বংস প্রাপ্ত হতে বসেছে।এখান থেকে লঞ্চে ফিরে সুন্দর বনের দিকে চলে যাবো।এর মধ্যে ই লঞ্চে লাঞ্চ,ট্রি ব্রেক ও ডিনার দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় দিনে আপনাকে দেখানো হবে সুন্দর বনের কোর এড়িয়া গুলো প্রথমেই আমরা ব্রেকফাস্ট করে চলে যাবো সজনে খালি এখান থেকে সুন্দর বন যাবার পারমিশান কার্ড জোগার করতে হবে। এখানে হোটেল আছে ভালো যা আপনি চাইলে এই প্যাকেজেই পেতে পারেন। এবং এখানে আপনি সান্ধ্য বিনোদন হিসাবে সাঁওতালী নৃত্য ও বনবিবির পালাও শুনতে পারবেন। এখানে আছে একটা মিউজিয়াম এবং এখানে প্রচুর কুমীড় আছে।তারপর আমরা যাবো সুধন্যখালি এখানে আছে একটা ওয়াচ টাওয়ার এবং একটি মিষ্টি জলের পুকুর এই টাওয়ার থেকে জলখেতে আসা বাঘ,হরিন,শিয়াল দেখতে পাবো।আছে সুন্দরী, গড়ান গাছের সবুজ পৃথিবী নোনা হাওয়া মাঝে একটা স্নিগ্ধতা।আছে দেবাকি ক্যাম্প যা নেট দিয়ে ঘেরা যাতে বাঘ না আসতে পারে সুন্দর লাগবে এই সবুজের মাঝে হাটতে।আছে বাঘের দেবী বনবিবি যাকে পূজা করে এখানের মানুষ জন বনে কাঠ ও মধু সংগ্রহ করতে যায়।
তৃতীয় দিন আমাদের নিয়ে যাওয়া হল ঝড়খালি। লঞ্চ থেকে নেমে নিয়ে যাওয়া হল ওয়াইল্ড লাইফ এনিম্যাল পার্কে যেটি খুব সুন্দর। এবং আছে টাইগার রিজার্ভ প্রকল্প ।আপনি যদি জঙ্গলে বাঘ না দেখে থাকেন এখানে দেখার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া আছে সতকখালি আইল্যান্ড।এই সব কিছু নিয়ে ছিল আমাদের তিনদিনের সুন্দরবন সফল।জলে জঙ্গলে বন্য জীবনের রোমাঞ্চের সান্নিধ্য পেতে আপনাকে আসতেই হবে বিশ্বের প্রাকৃতিক বিশ্ময় এই সুন্দর বনে।
কিভাবে যাবেন-
শিয়ালদহ থেকে ক্যানিং লোকাল ট্রেনে বা বাসে এবং সেখান থেকে গাড়িতে গদখালি এবং গদখালী থেকে বিভিন্ন লঞ্চ বুকিং হয় অথবা আপনি কোনো ট্যুর এজেন্সি সাথে ও আসতে পারেনসেক্ষেত্রে আরো ভালো পরিষেবা পাবেন।
কোথায় থাকবেন
অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হলে লঞ্চেই থাকতে পারেন নতুবা হোটেল আছে আপনার পছন্দ মত। সেক্ষেত্রে প্যাকেজ এ দেওয়া থাকে খরচ।